দেশ প্রেম

সমসাময়িক বাংলাদেশ ।
জালাল উদ্দিন চৌধুরী ।

ব্যাক্তিগত ভাবে কাউকে উদ্দ্যেশ করে কিছু বলছি না । এভাবে না নেয়ার জন্য ও অনুরুধ করছি । সমাজের একটি অবস্তাকে প্রকাশ করছি । "কে হইত চেয়ারম্যান কে হইত মেম্বার আমরা কি তাঁর খবর নিতাম" শাহ্‌ আব্দুল করিমের সেই উক্তি এখন সমাজে অচল । এখন সবাই সবার খবর নেয় ।

মুজিব নীতি বা জিয়া নীতি বর্তমানে কারো কারো কাছে নীজের আঁখের গোছানোর পন্থা । প্রকৃত মুজিব বাধি বা জিয়ার সৈনিক খুব কম ই সমাজে অবস্তান করছে । "ভোগ নয় ত্যাগে কর বিচরণ " তাঁদের জীবন দান এ নীতি গুলোর প্রধান শক্তি এবং প্রকৃতি ।
কিন্তু বাংলাদেশে চলছে তাঁর উল্টো । বাংলাদেশের প্রতিটি পারা মহল্লায় বর্তমানে এ উল্টো নীতির দৌড়াদৌড়ি । এ নীতির সুত্রে সাধারণ মানুষকে গেঁথে সমাজের সুবিধা বিদরা একটি অবস্থানে পৌঁছে । এ অবস্থান থাকে বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে নিজের পকেট ভারী করতে সাহাজ্য করে । অর্থাৎ একটি দলকে ব্যাবহার করে ওয়ার্ড মেম্বার বা চেয়ারম্যান হওয়া । মেম্বার হলে থানা এবং জেলা শহরে বাড়ি গাড়ী করা । চেয়ারম্যান হলে ঢাকা শহর পর্যন্ত তাঁর সীমানা বর্ধিত করা ।

একটি রাষ্ট্রের সমস্ত কর্মকান্ডের মূল হচ্ছে তার রাজনীতি । রাষ্ট্রের বিকাশ ও তার উন্নয়ন নির্ভর করে স্বচ্ছ নীতির উপর । রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি স্বচ্ছ নীতির অভাব ঘটলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে বাধ্য । বাংলাদেশের রাজনৈতিক  পরিস্থিতি সবসময় সংকটময় অবস্থার মধ্যে বিদ্যমান থাকে । কখন কি হচ্ছে বা হবে বুঝা মুশকিল । সব মহলেই  উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এবংঅনিশ্চয়তার অন্ধকার যেন চারদিক থেকে গ্রাস করে রাখে ।
গণতন্ত্রের নামে যা হচ্ছে বা অতীতে হয়েছে । এগুলোর পর্যালোচনায় আগামীর অবস্থা স্পষ্ট বোধগম্য নয় । জনসাধারণের নিরাপত্তা সংকট  দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে , তার একটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে বেশি অংশ বেসরকারি সংস্থা , ভিবিন্ন  এনজিও  বা ব্যাক্তি  সাধারণের মাধ্যমে পাওয়া যাবে ।
অর্থনৈতিক অবস্থা , আইনের শাসন, গণতন্তের সংকট, নিরাপত্তা সংকট, অন্ধ মৌলবাদ ইত্যাদি বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা ।

বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন পরিসংখ্যানিক সূচকে হয়ত বেড়েছে । কিন্ত মানবিক সমাজ’ প্রতিষ্ঠা বা মানুষকে প্রকৃত ‘মানুষ’ হওয়ার উন্নয়ন কতটা হয়েছে ?  ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ক্ষমতা নির্বিশেষে কোনরূপ বৈষম্য নয় সবাই সমান  সংবিধানের এ বিঁধি কি সবাই মেনে চলে ?

 “এখনো দাঁড়িয়ে কথার উত্তর দিচ্ছিস ! মাথা তোলে কথা বলছিস ! শালা মালায়ন ,তুই হিন্দু  ।  হিন্দুদের মত চলবে” এমন প্রলাপ বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের সাধারন বিষয় । অধিকাংশ লোক হিন্দু বা অন্য সংখ্যালুগু সম্প্রদায়কে ক্ষেত্র বিশেষে মানুষ ই মনে করে না । মুসলিমদের সংস্কৃতির কোন অনুষ্ঠানে হিন্দু বা  হিন্দুদের  সংস্কৃতির কোন অনুষ্ঠানে মুসলিমদের অংশ গ্রহণ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ।

বাংলাদেশে পূর্বে সংস্কৃতিচর্চা বেশি হতো । এখন রাজনীতিচর্চা বেশি হচ্ছে । রাজপথ-মেঠোপথ, হোটেল-রেস্তোরাঁ, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বত্র রাজনীতিচর্চা হয় । গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষও এখন রাজনীতি সচেতন হয়ে উঠেছে । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এগুলো রাজনীতির জন্য ভাল কোন সচেতনতা নয় । কারন সবাই রাজনীতির ক্যু কৌশলকে লোপে নেয়ার চর্চা করছে । ফলে ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে দেশের মানুষ ধীরে ধীরে পারস্পরিক বিরোধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে ।

রাজনৈতিক  নেতা একটি বিশৃঙ্খল সমাজকে জাগিয়ে তুলতে পারেন । সঠিক পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা দিতে পারেন । এতে করে সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরে  আসে । কিন্ত বাংলাদেশে যে রাজনীতির চর্চা হচ্ছে তা  ভয়ঙ্কর । কারণ তাতে সমাজ বা মানুষের মঙ্গলের কিছু নেই । ব্যাক্তিগত মঙ্গলকে নিয়ে সবাই ব্যাস্ত । রাজনৈতিক নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা আছে কিন্ত রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিযোগিতা নেই ।

অপরিচিত কেউ কোন সহযোগিতার জন্য রাজনৈতিক নেতার কাছে আসলে নেতার  বিভিন্ন  বাহা-না । অর্থাৎ টাকা ।  মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল করে কথা বলার ধরন বর্তমান কিছু রাজনৈতিক নেতাদের  যেন প্রধান চরিত্র ।
সমাজের ভিত্তি হলো ঐক্য, সহযোগিতা ও সংঘবদ্ধতা । বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে সব ক্ষেত্রে সামাজিক ঐক্য প্রয়োজন । একটি দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে ঐ দেশের মানবতার উন্নয়নের মাধ্যমে । বিশ্বের যে সব দেশ যতটুকু উন্নত ঐ দেশের মানবতা ততটুকু উন্নত ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"