সংক্রমণ বা ছোঁয়াচে এবং কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।



মুহাম্মদে আরাবী সাঃ ছিলেন মানবতার মুক্তির দূত তাই কিয়ামতের আগ পর্যন্ত সকল বিষয়ের সমাধান তিনি ইসলামী শরিয়তের মধ্যে রেখে গিয়েছেন রাসূলে কারীম সাঃ ছোঁয়াচে রোগ বা রোগের সংক্রমণ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। আমরা বাস্তবেও দেখতে পাই যে, রোগীর কাছে, সাথে বা চারিপার্শে থেকেও অনেক মানুষ সুস্থ রয়েছেন। আবার অনেক সতর্কতার পরও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগে। বস্তুত শুধু রোগজীবাণুর সংক্রমণেই যদি রোগ হতো তাহলে আমরা সকলেই অসুস্থ হয়ে যেতাম, কারন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকারের রোগজীবাণু আমাদের দেহে প্রবেশ করছে। রোগজীবাণুর পাশাপাশি মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতা, রোগ জীবাণুর কর্মক্ষমতা ইত্যাদি অনেক কিছুর সমন্বয়ে মানুষের দেহে রোগের প্রকাশ ঘটে। হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন "সংক্রামনের অস্তিত্ব নেই" তখন এক বেদুঈন বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমার উটগুলি হরিনীর ন্যায় সুস্থ থাকে। এরপর একটি চর্মরোগে আক্রান্ত উট এগুলির মধ্যে প্রবেশ করার পরে অন্যান্য উটও আক্রান্ত হয়ে যায়। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন তাহলে প্রথম উটটিকে সংক্রামিত করলো কে?(বুখারী মুসলিম) পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সাঃ সংক্রমণের বিষয়ে সতর্ক হতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি বলেছেন অসুস্থ কে সুস্থের মধ্যে নেওয়া হবে না (বুখারী মুসলিম) অপর একটি হাদিসের মধ্যে একটি রাসূলে কারীম সাঃ বলেছেন যদি তোমরা শুনতে পাও যে, কোনো জনপদে প্লেগ বা অনুরুপ মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে তবে তোমরা তথায় গমন করবে না আর যদি তোমরা যে জনপদে অবস্থান করছো তথায় তার প্রাদুর্ভাব ঘটে তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না। (বুখারী মুসলিম) এভাবে রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রায় দেড় হাজার বৎসর পূর্বে সংক্রমণ প্রতিরোধে বিচ্ছিন্নকরণ ( Quarantine ) ব্যবস্থার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। মুমিনরা বিশ্বাস করেন যে, সকল বিষয়ের ন্যায় রোগের ক্ষেত্রেও আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এজন্য সংক্রমণের ভয়ে অস্থির বা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়ার কোনো কারন নেই। পাশাপাশি যে সকল রোগের বিস্তারে সংক্রমণ একটি উপায় বলে নিশ্চিত জানা যায় সে সকল রোগের বিস্তার রোধের ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অসুস্থ ব্যক্তির সঠিক বিশ্রাম ও কষ্টদায়ক দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া ইসলামের নির্দেশ। অসুস্থতার কারনে নামায বসে, শুয়ে বা ইশারায় পড়তে, রোযা কাযা করতে এবং ওযু ও গোসলের বদলে তায়াম্মুম করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ অসুস্থা বৃদ্ধির আশঙ্কা  থাকা সত্ত্বেও পানি ব্যবহার করে বা সিয়াম পালন করে তবে তার সাওয়াব তো হবেই না, বরং তিনি পাপী হবেন। আল্লাহ তায়ালা যে সুযোগ দিয়েছেন তা গ্রহণ না করে অতি তাকওয়া প্রদর্শন ইসলামে নিন্দা করা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্বে কোভিট- ১৯ নামে যে ভাইরাস রোগ সয়লাব হয়েছে এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং আলেমগন যেই সিদ্ধান্ত দেয় এটা মেনে নেওয়াই শ্রেয়।

মাওলানা সাইফুল ইসলাম ফরিদপুরী যুগ্ম সাধারন সম্পাদক :হেফাযতে ইসলাম ফরিদপুর জেলা শাখা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"