ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।
এইচ,এম ইমরান কাজী: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এই টাকায যেন কাল হলো মসজিদের ইমাম সাহেবের। হতে হলো চালকরিচুত্য। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর ইউনিয়ন সিংহ ডাঙ্গা গ্রামের উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মৌলভী মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লার ক্ষেত্রে, ৩০শে মে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত প্রণোদনার টাকার চেক তুলে দেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। টাকাটি উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি ইমাম সাহেবকে না জানিয়ে উক্ত মসজিদের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক মোঃ একরাম হোসেনকে দিয়ে তুলে নেন।আর এই টাকা চাইতে গিয়ে চাকরীচুত্য হন ইমাম সাহেব।
ঘটনাটি ঘটিয়েছেন শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি মীর খোরশেদ আলম।
উক্ত মসজিদের ইমাম মৌলভী মোহাম্মদ আবু সাঈদ মোল্লা জানান, তিনি দীর্ঘ ১৫ মাস ওই মসজিদে ইমামতি করছেন। ২০১৯ সালের মার্চ মাসের ১ তারিখে তিনি ওই মজজিদের ইমামতির চাকুরি পান।তিনি বলেন আমাকে না জানিয়েই মসজিদ কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনার টাকা মোঃ একরাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি কে দিয়ে তুলে নেন। সেই টাকা চাইতে গেলে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এই মাসের বেতন দিয়ে ৩১ তারিখ রোববার যোহর বাদ আমাকে চাকরীচ্যুত করেন।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি মীর খোরশেদ আলম জানান, আমাদের মসজিদের অবস্থা ভাল না হওয়ায় আমি চেয়ে ছিলাম ওই টাকা দিয়ে মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যায় করব। এছাড়া ওই ইমামকে ঈদের আগেই ছুটি দিতে চেয়েছিলা। বিভিন্ন কারণে দেওয়া হয় নি। এখন তাকে বাদ দিয়ে আমরা নতুন ইমাম নিয়েছি।
এদিকে টাকা উত্তোলন কারি উক্ত মসজিদের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক মোঃ একরাম হোসেন জানান, আমি মসজিদ কমিটির সভাপতি কথা মত টাকাটি তুলে এনে তাকে দিয়েছি। এখানে আমার কোন দোষ নাই।
জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, উক্ত মসজিদের সভাপতির প্রতিনিধির হাতে আমরা টাকাটা তুলে দিয়েছি। এবং তাকে বলে দিয়েছি টাকাটা যেন উক্ত মসজিদ এর ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে দেওয়া হয়।কিন্ত তিনি যদি টাকাটা আত্মসাৎ করে থাকেন তা হলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ইমাম সাহেবের চাকুরিকুতের ব্যাপারে বলে এটা ওই মসজিদ কমিটির ব্যাপার। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
শত্রুজিৎপুর ইউনিয়ন আ'লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম মীর খোরশেদ আলম ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার অংশ হিসাবে জেলার ১৮৭৬ টি মসজিদের ঈমাম ও মোয়াজ্জিনদের ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেখান থেকে ৩০শে মে শনিবার জেলার শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামে সদর উপজেলার ৭৪৭টি মসজিদের ঈমাম ও মোয়াজ্জিনদের হাতে ৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর।
মন্তব্যসমূহ