ইসলামের ঢাল তৈরীর কারখানা গুলো যেন বন্ধ না হয়ে যায়।



তাওহীদ নিউজ২৪:আমরা সকলে জানি শত্রুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে ঢাল এর কোন বিকল্প নেই তাই আমাদের ভালো করে বুঝতে হবে ইসলামের শত্রুরা এই বাস্তবতা সম্পর্কে অবহিত যে, পৃথিবীতে যে মানব কাফেলা টি ইসলামের পক্ষে ঢাল হয়ে আছে তারা হলো চাটাইয়ে বসে জীবনযাপনকারী এই আলেম সমাজ। এই সহজ সরল মানুষ গুলোই ইসলামের জন্য ঢালের কাজ দিচ্ছেন কাজেই ইসলামবিদ্বেষীরা জানে সমাজের এই হুজুর শ্রেণীটি যতদিন পৃথিবীতে বিদ্যমান থাকবে ততদিন পর্যন্ত পৃথিবী থেকে ইসলামের নাম চিহ্ন মুছে ফেলা সম্ভব হবে না। ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে এই চাটাইনিবাসী মৌলবীরা যখনই কোন অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে, সেখান থেকে ইসলাম ও বিদায় নিয়েছে। ইসলামের শত্রুরা সেই অঞ্চলে অনায়াসে তাদের মিশন বাস্তবায়িত করেছে। ইতিহাস থেকে জানা যায় ইসলামী অঞ্চলের এমন এমন ভূখণ্ড আছে যেখানে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বীজটিকেও হত্যা করে ফেলা হয়েছে। তার ফলাফল কি দাঁড়িয়েছে রাখালকে হত্যা করে ফেলার পর পশুপালটির যেমন কোনো অভিভাবক থাকেনা নেকড়েরা তাদের ছিঁড়েফেড়ে খেয়ে ফেলে তেমনি বর্তমানে পৃথিবীর বহু অঞ্চলে মুসলমানদের অবস্থা ঠিক তেমন রূপ ধারণ করেছে। বাগদাদের অবস্থা দেখুন বাগদাদ সেই নগরী যেটি কয়েক শতাব্দি যাবত ইসলামী জগতের রাজধানীর ভূমিকা পালন করেছিল। গোটা পৃথিবীর মানুষ সেখানে খেলাফতে আব্বাসীয়ার দাপট ও জৌলুস দেখেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের একটি জমজমাট বাজার ও ছিল বাগদাদে। এখন সেই দ্বীনি  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম চিহ্ন ও নেই। সেখানে সমস্ত মাদ্রাসা এখন স্কুল কলেজে পরিণত হয়ে গেছে। এখন দিনি শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্যাকালটি আছে। সেগুলোতে দীনিয়াত শিক্ষা দেওয়া হয়। সেই ফ্যাকাল্টি গুলোর শিক্ষকদের দেখে বুঝবার কোন উপায় নেই যে, এরা আলেম তো দূরের কথা আদৌ মুসলমান কিনা। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহশিক্ষা চালু আছে ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে শিক্ষা গ্রহণ করছে। ইসলাম স্রেফ একটি দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে টিকে আছে, যাকে শুধু একটি ঐতিহাসিক দর্শন হিসেবে পড়ানো হচ্ছে। বাস্তব জীবনে তার কোন প্রভাব পড়ছে না যেমনি ভাবে অমুসলিমরা পরছে। বর্তমানে আমেরিকা কানাডা ও ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ও ইসলামী শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। সেগুলোতে ইসলাম পড়ানো হচ্ছে ওখানে ও হাদিস ফিকাহ ও তাফসীর শেখার ব্যবস্থা আছে। আপনি যদি তাদের প্রবন্ধদি পড়েন, তাহলে সেগুলোতে এমন এমন কিতাবের নাম দেখতে পাবেন, আমাদের বহু মাওলানা সেসব কোনদিন শোনেননি। বাহ্যত খুব গবেষণার সঙ্গে ইসলাম শেখা হচ্ছে কিন্তু প্রশ্ন হল দ্বীনের কেমন শিক্ষা যা মানুষকে ঈমানের সম্পদ দান করতে সক্ষম হয় না। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসলামী জ্ঞানের সমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়া সত্ত্বেও ব্যর্থই ফিরছে! তার একটি ফটো কণ্ঠনালীকে ভেজাতে সক্ষম হচ্ছে না। পশ্চাত্যের এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শরিয়াত বিভাগও আছে ইসলামের মূলনীতি বিভাগ ও আছে। কিন্তু তার কোন প্রভাব জীবনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ইসলামী জ্ঞানের আত্মাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইসলামের শত্রুরা এই তথ্যটি জানে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ চাটাইয়ে বসে জীবনযাপনকারী মৌলভীরা সমাজে বিদ্যমান থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানদের ঈমানে চিড় ধরানো সম্ভব হবে না। সেজন্য ইসলামের শত্রুরা তাদের অপপ্রচারের পুরো মিশনটি এই মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে নিয়োজিত করে রেখেছে।


পশ্চাত্যের কবি মরহুম ইকবাল সম্পর্কে একটি কথা খুব প্রসিদ্ধ যে, তিনি "মোল্লা" সম্পর্কে অবজ্ঞামূলক কথাবাত্রা বলতেন। এক স্থানে তিনি ইংরেজ ও ইসলামের শত্রুদের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে আফগানিস্থান সম্পর্কে একটি কবিতা বলেছেন: কবিতার অর্থ তোমরা যদি আফগানিদের দ্বীনি চেতনাবোধ বিলীন করতে চাও, তাকে মুসলমানদের হৃদয় জগত থেকে মুছে ফেলতে ইচ্ছা কর, তাহলে এর একটি মাত্র পথ আছে তা হলো "মোল্লা"দেরকে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দাও। এই মোল্লারা যতক্ষণ পর্যন্ত বসা আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের অন্তর থেকে ঈমানের মর্যাদা কে বের করা যাবে না। বর্তমান সময়ে কওমি মাদ্রাসা গুলোর বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নানা ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে। যেমন বলা হচ্ছে, এরা চৌদ্দশ বছর আগের মানুষ। এরা কূপমন্ডুক। এরা সেকেলে। এরা পশ্চাদপদ। দুনিয়াতে বাস করার যোগ্যতা এদের নেই। দুনিয়াবী কোন জ্ঞান বিজ্ঞানের নেই। এরা মুসলিম জাতির চাকাকে উল্টোদিকে চালাতে চায় ইত্যাদি। বিভিন্ন সময় এসব স্লোগান উচ্চারিত হয়ে থাকে। এখনতো অত্যন্ত জোরালো কণ্ঠে আমাদের দেশে এই স্লোগানের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এই অভিযোগ ও উত্থাপিত হচ্ছে যে, মাদ্রাসাগুলো সন্ত্রাসী হয়ে গেছে। এরা উন্নয়নের শত্রু। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তাদের ঘাড়ে। মৌলবাদের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। পশ্চাৎপদ তার অভিযোগ তাদের উপর। প্রগতির শত্রু হওয়ার অপবাদ ও তাদের মাথায়। জগতের সব অভিযোগ অপবাদের বৃষ্টি এই বেচারা মৌলভীদের উপর বর্ষিত হচ্ছে।

তবে মৌলভীদের ওপর যতই অভিযোগ আসুক মৌলভীরা কিন্তু বড় শক্ত জিনিস। কারণ একজন মৌলভী যখন এই গলিতে প্রবেশ করে তখন আলহামদুলিল্লাহ কোমরটাকে শক্ত করেই একজন মৌলভী এই গলিতে প্রবেশ করে। তাদের জানা আছে এসব অভিযোগ অপবাদ তাদেরকে সহ্য করতেই হবে, এসব বদনাম দুর্নাম কে স্বাগত জানিয়েই খোশ আমদেদ জানিয়েই এরা এই জগতে প্রবেশ করে।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আরো শক্তভাবে অবস্থান করে ইসলামের ঢাল তৈরীর কারখানা এই কওমী মাদ্রাসাগুলোকে রক্ষা করার তৌফিক দান করেন আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।

মাওলানা সাইফুল ইসলাম ফরিদপুরী।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"