ইতিহাস পাঠের গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তা ও পদ্ধতি।মোঃ আবু বকর বিন আলমগীর


তাওহীদ নিউজ২৪:মহান আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিজীবের প্রতি দয়াপরশ হয়ে পৃথিবী পরিচালনার এমন কতিপয় নীতিমালা স্থাপন করেছেন, যা অপরিবর্তনশীল।এসব নীতিমালার উপর ভিত্তি করেই  মানবজীবন টিকে থাকে এবং মানুষ নিজ নিজ কাজ-কর্ম এসব নীতিমালার ভিত্তিতেই করে থাকে। যদি প্রত্যেক যুগ বা প্রত্যেক স্থানের জন্য ভিন্ন -ভিন্ন সতন্ত্র  নীতিমালা থাকতো, তবে মানবজীবন অস্থিতিশীল হয়ে পড়তো এবং পূর্ববর্তী সকল ইতিহাস ধ্বংসস্তূপে পরিণত হত।
কিন্তু আল্লাহ তায়ালার অশেষ অনুগ্রহ ও কৃপায় ইতিহাস কখনো ধ্বংস হয়না ; বরং গতকাল আপনার সাথে যে ঘটনাটা ঘটেছে আজ তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, আজ যা সংঘটিত হয়েছে কাল তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, এভাবেই কেয়ামত পর্যন্ত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকবে।
সুতরাং পূর্ববর্তী ঘটনাবলি বারংবার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে, এবং বাহ্যত তা কখনো কখনো একইরকম হয়ে থাকে,যেন তা ভূপৃষ্ঠে নতুন কোন ঘটনা নয়। তাই আমরা যখন ইতিহাস পাঠকরি এবং একথা জানতে পারি যে,বর্তমান সময়ের কোন ঘটনা পূর্ববর্তী কোন ঘটনার সাথে সম্পূর্ণ মিল রয়েছে, তখন আমাদের পক্ষে ঘটনাটির শেষ পরিণতি ও ফলাফল উদ্ঘাটন করা সহজ হয়ে যায়।সুতরাং সংঘটিত ঘটনাটি যদি কল্যাণকর হয়, তবে আমরা সেই পথ ও পন্থা অবলম্বন করব যেই পথে পরিচালিত হয়েছেন পূর্ববর্তীগন। পক্ষান্তরে সংঘটিত ঘটনাটি যদি অমঙ্গলজনক হয়, তবে আমরা পূর্ববর্তীদের ভুল কর্মপন্থা থেকে বিরত থাকব এবং তাদের কর্মপন্থা পরিহার করব।
এই পদ্ধতিতে ইতিহাস পাঠ করতে পারলে ইতিহাস হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত ও সজীব।
আপনি আমি ইতিহাস পাঠ করব প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার জন্য ;কেবলমাত্র সান্তনালাভ কিংবা ইতিহাসবিদ হওয়ার জন্য নয়। কেননা আপনি আমি যখন প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার জন্য বা পূর্ববর্তী ঘটনাবলি থেকে শিক্ষা অর্জনের জন্য ইতিহাস পাঠ করব, তখন এমনিতেই ঐতিহাসিক বনে যাব, ঐতিহাসিক হওয়ার জন্য আপনাকে ইতিহাস পাঠ করতে হবেনা। আর এই
পদ্ধতিতে ইতিহাস পাঠ করলে তার একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে : তাহল ইতিহাসের ফাঁকেফাঁকে ছত্রেছত্রে ইবরত ও শিক্ষা অনুসন্ধান করা। এবিষয়টি মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে এভাবে এরশাদ করেনঃ-
"নিশ্চয় তাদের ঘটনায় জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে শিক্ষা গ্রহণের উপাদান "
একারণেই আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমের একতৃতীয়াংশ ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। যাতে করে পূর্ববর্তী জাতির সাথে মহান আল্লাহ তায়ালার রীতিনীতি আচার -আচরণ সম্পর্কে মুসলমানগন অবগত হতে পারে এবং একথারও দৃঢ় বিশ্বাস করে যে,আল্লাহ তায়ালার এসকল রীতিনীতি অবধারিত ও অপরিহার্য। এর ফলে তারা কোন ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই তার পরিণাম সম্পর্কে অবগত হতে পারবে এবং তা থেকে উপকৃত হতে পারবে। তবে প্রতিটি যাবতীয়দিক পাঠকরা এবং তা দিয়ে উপকৃত হওয়ার ও শিক্ষা গ্রহণের মহামূল্যবান দক্ষতা  অর্জন অসম্ভব।
একারনেই আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন
"সুতরাং (হে নবি) আপনি তাদেরকে এসব ঘটনা শুনাতে থাকেন, যাতে তারা কিছুটা চিন্তাভাবনা করে"।
                                 

আবুবকর ইবনে আলমগির
সদরপুর ফরিদপুর

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"