কোন দিকে যাচ্ছে আমার স্বাধীন বাংলাদেশ


    এইচ এম ইমরান কাজী 
জার্নালিষ্ট: তাওহীদ নিউজ২৪ আজ থেকে এক মাস আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রাক্তন অফিসার অনারারী ক্যাপ্টেন জহিরুল হক খন্দকার মারা যান। পুলিশ হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু, কিন্তু বাংলাদেশের একটা পত্রিকাতেও এ খবর আসেনাই। কারণ তিনি মারা গেছেন ডিজিএফআই এর হাতে আট মাস গুম এবং নির্যাাতনের শিকার হয়ে।

তিনি একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্ণেল শহীদউদ্দিন খান ছিলো শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং শেখ রেহানার ভাসুর মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দীকি ও তার স্ত্রীর পারিবারিক জমি/এপার্টমেন্ট ব্যবসার বিজনেস পার্টনার।

জেনারেল তারেকের সাথে ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা হলে কয়েক বছর আগে কর্ণেল শহীদ কোনমতে নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে ব্রিটেন পালিয়ে যান। এরপর থেকে তার কপালে শনির দশা নেমে আসে। ঢাকায় তার বাসা ও অফিস তল্লাশী ও ভাংচুর করে র্যাব ও ডিজিএফআই বাহিনী।

এ বছরের জানুয়ারী মাসে তার তিনজন স্টাফকে নিয়ে যায় র্যাব এবং তাদের  গুম করে। কোন আদালতে তাদেরকে তোলা হয়নি, কোথাও গ্রেফতার দেখানো হয়নি। হঠাৎ করে সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ জহিরুল হককে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হিসেে গ্রেফতার দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং সেখানে তিনি 'হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে' মারা যান।

আট মাস তিনি গুম ছিলেন। তার সাথে গ্রেফতার হওয়া কর্ণেল শহীদের অন্য দুইজন স্টাফ, সৈয়দ আকিদুল আলী এবং খোরশেদ আলম পাটোয়ারী এখনো গুম।

ঠিক যেভাবে গুম হয়ে গেছে ইলিয়াস আলী, মীর আহমদ বিন কাশেম আরমান, আবদুল্লাহ আমান আযমী, ওয়ালিউল্লাহ, আল মুকাদ্দাস সহ শত শত মানুষ। যেভাবে গুম হয়েছিলো হুম্মাম কাদের চৌধুরী এবং মুবাশার হাসান তবে তারা এলিট শ্রেণীর হওয়াতে মুখ বন্ধ রাখার ওয়াদা করে কোন রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসতে পেরেছেন।

বাংলাদেশের একটা পত্রিকাতেও এ নিয়ে কোন খবর আসেনাই। এটা সম্ভব না। কার ঘাড়ে দুইটা মাথা আছে? একমাত্র আলজাযিরাতে ডেভিড বার্গম্যান  David Bergman লিখতে পেরেছেন।

প্রথম গুমের খবর মার্চ মাসে: https://www.aljazeera.com/news/2019/03/exclusive-bangladesh-top-security-adviser-accused-abductions-190319114412895.html

জহিরুল হকের মৃত্যুর খবর গতকাল: https://www.aljazeera.com/news/2019/11/employee-uk-based-bangladeshi-businessman-dies-custody-191122110819149.html


  • আপনারা যারা মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবসে জাতির সুর্যসন্তান সামরিক বাহিনীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান, আপনাদের জন্য একটা প্রশ্ন থাকলো। ভারতীয় হানাদার বাহিনী এবং পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে বাংলাদেশী হানাদার বাহিনীর পার্থক্যটা কি?


কাশ্মীরে ইন্ডিয়ান আর্মির হাতে যে লোক অন্যায়ভাবে মারা গেছে এবং বাংলাদেশের ডিজিএফআই/রেবের হাতে যে জহিরুল হক অন্যায়ভাবে মারা গেছে দুজনের স্ত্রীর কষ্টই সমান মজলুমের কষ্ট।

বরং কাশ্মীর ও বেলুচিস্তানে ঐসব দেশের সামরিক বাহিনীকে অনেক কিছু করতে হয় দেশের নিরাপত্তার জন্য। রাষ্ট্রীয় অখন্ডতার জন্য। অন্যদিকে বাংলাদেশে ডিজিএফআই রেব আর্মি এসব গুম খুন করছে কেবলমাত্র সরকারী দলের বিরোধিতা করার অপরাধে। এমনকি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক ঝামেলা সেটল করার জন্য।

সুতরাং উত্তরটা হলো, অন্য দেশগুলোর সামরিক বাহিনী অন্যায় করলেও তার একটা গ্রেটার জাস্টিফিকেশন আছে টু সাম এক্সটেন্ট, এক্সেপটেবল অর নট, কিন্তু বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী পরিণত হয়েছে স্রেফ ভাড়া খাটা প্রাইভেট মার্সেনারি গুন্ডা বাহিনীতে। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"