ইসলাম সুরক্ষার এক তুলনাহীন দুর্গ দারুল উলুম দেওবন্দ।


তাওহীদ নিউজ২৪ ডেস্ক :-আমাদের মনে রাখতে হবে ইতিহাস বানোয়াট কোন গালগল্প নয়, ইতিহাস হচ্ছে পূর্বেকার জামানার মানুষের জীবনচরিত-গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি যা লেখকের কলমের অশ্রুকালিতে বেরিয়ে আসা বাস্তব সত্য, তেমনিভাবে আজকের দিন এই মূহুর্ত সবই আগামীকাল ইতিহাস বলে গণ্য হবে।                                    
যাইহোক আমি দেওবন্দ ইতিহাস সম্পর্কে লিখতে এসে অঅতিরিক্ত জ্ঞান জাহির করে পাঠকের বিরক্তির রোষানলে পড়তে রাজি নই তবে সুধী পাঠককে এতটুকু বলতেই পারি যে শুধু ইতিহাস পড়ার জন্যই পড়া না এথেকে আমাদের শিক্ষা অর্জন করতে হবে ইতিহাসের মর্ম বুঝতে হবে।
আমি দারুলউলুম দেওবন্দের মৌলিক ইতিহাসের সারাংশ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ইংশাআল্লাহ।
১৮৫৭ সালে আজাদি লড়াই হল।  শামেলির ময়দানে মুসলিম বনাম ইংরেজ লড়াই হল সে যুদ্ধে মুসলমানের আমির ছিলেন সায়্যেদুত তায়েফাহ হাজি এমদাদুল্লাহ মক্কী মুহাজিরী( র:)
আর সেনাপতি ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম আল্লামা কাসেম নানুতুবি (র:),তবে দুঃখজনক হলেও সত্য সে যুদ্ধে মুসলমান পরাজয় বরণ করে। হাজি এমদাদুল্লাহ মক্কী মুহাজিরি( র:)মক্কায় হিজরত করেন আর কাসেম নানুতুবি (র:)তিনদিন আত্মগোপন করেন।
ঠিক এই সময়ই শেতাঙ্গ বৃটিশ ইংরেজরা হাজার হাজার মাদ্রাসাকে বন্ধ করে দেয় অসংখ্য কোরআন কিতাব জালিয়ে দেয়, শুধু তাই নয় এই অভিশপ্ত শয়তানের দল ৫১ হাজার নবির ওয়ারিশ আলেম-উলামাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মারে।
যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিপটে অশুভ  ক্ষমতাবলে এই আন্দলোনকে দমন করতে ইংরেজ সরকার সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু এই আন্দলোনের মাধ্যমে তারা একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে,মুসলিম জাতিকে কখনোই গোলামীর জিন্জিরে আবদ্ধ করা যাবেনা। তাই তারা নতুন কর্ম পদ্ধতি গ্রহণ করলো।যে শেতাঙ্গ নরখাদকের দল মুসলিমদের রক্তে হলি খেলেছে তারাই আবার মানুষের মাঝে পির আওলিয়া জনদরদী সেজে হাজির হয়েছে।
উদ্দেশ্য ছিল যে জাতিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক কিছু করা গেলনা, দেখি নরম সুরে ভালবাসার বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে এদের মন মানুষিকতা ধার্মিকতা মননশীলতা দূর করা যায় কিনা, মুসলিমদের মূল শিকড়ে ঘুণ ধরানই ছিল তাদের আসল কাজ মূল লক্ষবস্তু , তাদের এই হীন উদ্দেশ্য সফল করার কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করা।
এবং এর মাধ্যমে পাশ্চাত্যের চতুর্মখী কুফুরি শিক্ষা প্রমট করে মুসলিমদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধর্মকে থেকে আলাদা করা এবং তাদের অন্তরে কুফুরি বদ্ধমূল করে দেওয়া।যেন এতে প্রভাবিত হয়ে নিজ বিবেক দিয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আমি অধম মনে করি  তারা তাদের কার্যসিদ্ধিতে ১০০%সফলতা লাভ করেছে।
এ লক্ষকে সামনে রেখে"লর্ড ম্যাকল"এক নতুন শিক্ষানীতির শুপারিশ করে,। এমনকি সে এ  নিয়ে সে একটা প্রবন্ধ ও রচনা করে।তাতে ভারতবর্ষে জাতীয় শিক্ষা নীতি তথা মাদ্রাসা নিয়ে ন্যক্কারজনক ভাবে উপহাস করে। এবং
ওলামায়ে কেরামের উপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে।।
পরিশেষে সে স্পষ্ট লেখে যে, এখন আমাদের কর্তব্য হল এমন একটা দল তৈরি করা যারা আমাদের অধিকৃত এলাকার তবে আমাদের মাঝে দোভাষীর কাজ করবে, । যারা রক্তবর্ণে বাদামী হলেও মননশীলতায় চিন্তা চেতনায় চরিত্রের দিক থেক হবে পুরপুরি ইংরেজ।
দূরদর্শী ওলামায়ে কেরাম তাদের এই
সুদূর প্রসারী চক্রান্ত ও ভয়াবহতা সম্পর্কে বেখর ছিলেননা।তারা বুঝতে পেরেছিলেন এমতাবস্থায়! মুসলিমদের ইমান আকিদা রক্ষার্থে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে মুসলিমদের জন্য অমানিশা অন্ধকার অপেক্ষা করছে, ইসলাম ও মুসলমানের মুসলমানিত্ত টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হবে।
কয়েক খান্দান পড়ে হয়তো ইসলাম ও তার মৌলিক বিষয় সম্পর্কে সচেতন কাওকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা,। তাঁরাও রণক্ষেত্রে লড়াইয়ের পাশাপাশি নবউদ্ভুত শিক্ষানীতির ধ্বংসের হাত থেকে মুসলিম জাতিকে রক্ষার পন্থা বের করলেন।
আর→ দারুলউলুম দেওবন্দ ← প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তারা এদিকেই অগ্রসর হয়েছিল।
হুজ্জাতুল ইসলাম আল্লামা কাসেম নানুতুবি (র:)
ফকিহুল হিন্দ আল্লামা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি(রঃ) হাজি আবেদ হুসাইন রঃ
১৮৫৭ সালের জিহাদে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।একারনেই হয়তো বহুদিন যাবৎ
ইংরেজ সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে।
সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যর্থ হলে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য প্রস্তুতি ও একটি নিরব আন্দলোনের বীজ বপন করেন দেওবন্দের মাটিতে। যা গোটা ভারতবর্ষে তার শাখা প্রশাখা পত্র পল্লব বিস্ততার করে এক মহীরুহের  রূপ ধারন করেছে।
তখনকার ভারতবর্ষে দ্বীনি মারকাজ প্রতিষ্ঠা করা আর নিজে কে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া একই কথা।
ওলামায়ে কেরামকে আজাদি আন্দলোনে যোগ দেওয়ার অপরাধে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হত বা আন্দামান দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হত। আর যারা মুক্ত ছিল তাদের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হওয়টা ছিল দুষ্কর,, তাই আকাবীরগন প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রামকেই বেছে নিয়েছন,,। অবশেষে কাসেম নানুতুবির নেতৃত্বে আর মুসলিম জনতার সহায়তায় ১৫ মুহররম ১২৮৩হিজরী মোতাবেক ৩০মে১৮৬৭খৃঃ নিতান্তই অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে এই নিরব আন্দলোন →দারুল উলুম দেওবন্দ ←নামে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

তথ্য সুত্র:★তাহরিকে দেওবন্দ (ড.খন্দকার মুস্তাক আহমাদ) ★তারিখে দেওবন্দ, ★ইতিহাস ঐতিহ্য অবদান (আবুল ফাতাহ মুহাঃ ইয়াহইয়া)
★দারুলউলুম দেওবন্দের পূর্বসূরি উত্তরসূরি (মাওঃ জুবায়ের আহমাদ)

আবুবকর ইবনে আলমগির ,সদরপুর ফরিদপুর 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাফেজ মাহমুদকে দেখতে 75000 টাকা নিয়ে হাসপাতালে জননেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল

চিকিৎসাধীন হাফেজ মাহমুদ এখন বাড়িতে কেন?

ইমামের টাকা আত্মসাৎ করার প্রতিবাদ করায় চাকরি গেল ইমামের।

নগরকান্দায় গ্রাম্য কাইজায় মাদ্রাসায় হামলা"